ঝালকাঠিতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মো. জসিম (৩০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে সদর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
চলতি বছর জেলায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মেহেদি হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. জসিম সদরের উত্তর কিস্তাকাঠি এলাকার নজর আলীর ছেলে।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে প্রচণ্ড জ্বর ও শরীরে ব্যথা নিয়ে জসিমকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। তাঁকে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলে রাত আটটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে জেলায় প্রতিদিনই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠিতে এখন পর্যন্ত অর্ধশত রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে বর্তমানে সদর হাসপাতালে ৮ জন, তিনটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জনসহ মোট ২৪ জন চিকিৎসাধীন।
এর আগে আক্রান্ত ২৮ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। একজন বাসায় চিকিৎসা নিয়েছেন এবং আরেকজন বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
একদিকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে রোগীরা বাড়ি ফিরছেন, অন্যদিকে নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালগুলোয়।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় আলাদা ইউনিট করা হয়েছে।
ঢাকাসহ জেলার বাইরে থেকে আসা রোগীদের ডেঙ্গু শনাক্ত হলে ওই ইউনিটে ভর্তি করা হচ্ছে।
আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে স্থানীয় রোগীর সংখ্যা কম। চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গু ওয়ার্ডের রোগীরা তাঁদের নির্দেশনা মানছেন না।
তাঁরা ওয়ার্ডে সঠিকভাবে মশারি টানিয়ে থাকেন না।
সদর হাসপাতালে ভর্তি পৌর এলাকার গুরুদাম এলাকার বেলায়েত হোসেন (৫৫) নামের এক রোগী বলেন, জ্বর নিয়ে কিছুদিন বাড়িতেই ছিলেন।
পরে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করিয়ে দেখেন ডেঙ্গু হয়েছে। তিনি বলেন, রাতে মশারি টানানো হলেও গরমের কারণে দিনের বেলা ওয়ার্ডে রোগীরা মশারি টানান না।
জেলা সিভিল সার্জন এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, জেলায় আশঙ্কাজনকহারে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডেঙ্গু হলে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। রোগীদের মশারি টানানোসহ নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা হবে।
এদিকে ঝালকাঠিতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আরা মৌরী বলেন, এডিস মশার বংশবিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রাথমিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
সব জায়গায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা নির্দেশনা মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
One Reply to “ঝালকাঠিতে ডেঙ্গু জ্বরে একজনের মৃত্যু”
Comments are closed.