অবুঝ দুই শিশু মরিয়ম ও নূরের মা আত্নহত্যা করে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে বেশ কয়েক মাস আগে। বাবা রনি শিকদার ফিরোজ একজন রিকশাচালক। তাই দেখাশোনার কেউ না থাকায় কাজে যাওয়ার সময় মরিয়ম ও নূরকে ঘরে তালাবন্দি করে যান রনি। এ কারণে প্রায় সময়ই প্রস্রাব-পায়খানা করে নোংরা করার পরও সেখানেই থাকতে হয় অবুঝ এই দুই শিশুকে। এমন খবর শুনে কেঁদে উঠেছে অভিনেত্রী পরীমণির মাতৃহৃদয়।
মরিয়ম ও নূরকে সাহায্য করতে পরীমণি যোগাযোগ করেন স্থানীয় কনটেন্ট নির্মাতা সাব্বির খানের সঙ্গে। কনটেন্ট নির্মাতা সাব্বির খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
‘রনি সিকদার ফিরোজের বাসা আর আমার বাসা খুব বেশি দূরত্বে নয়।’
‘তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর সচরাচর আমার মোবাইলে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন।’
‘গতকাল এক ব্যক্তি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এসে একটি রিকশা উপহার দিয়ে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন,
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিত্রনায়িকা পরীমণি রিকশাচালক ফিরোজকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মূলত তার দুই সন্তান মরিয়ম ও নূরকে তার ছেলে রাজ্যর সঙ্গে লালনপালন করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
সাব্বির খান আরও বলেন,
পরীমণি ছোটবেলায় তার মাকে হারিয়েছিলেন, সেই স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন,
শিশু দুটিকে তালাবদ্ধ করে রেখে যাওয়ার প্রতিবেদনটি দেখার পর রাতে তার ঘুম হয়নি। খুবই মর্মস্পর্শী ঘটনা।
এজন্য তিনি চাইছেন, অসহায় এই পরিবারটিকে সাহায্য করতে।
সেজন্য প্রথমে রিকশাচালক ফিরোজের সঙ্গে কথা বলতে চান। আলাপ করে ফিরোজের যেটা সুবিধা হবে সেইভাবে সাহায্য করতে আগ্রহী তিনি।
তবে এরই মধ্যে ফিরজের সমস্যার বেশ সমাধান হয়েছে। কেননা অসহায় মরিয়ম ও নূরের খবর জেনে নড়েচড়ে উঠেছ সমাজ সেবা অধিদফতর।
বরিশালের এ প্রতিষ্ঠানের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, শিশু সুরক্ষায় পাশে আছেন প্রতিষ্ঠানটি।
অসহায় শিশুদের পাশে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বরাদ্দেরও।
এরই মধ্যে বাবা রনি উপহার পেয়েছেন চার্জার রিকশা। এই মুহূর্তে দুই শিশু মরিয়ম ও নূরকে দেখভাল করছে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর পরিচালিত দিবাযত্ন কেন্দ্র।
২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করেন রনি সিকদার ফিরোজের স্ত্রী মারজান।
এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় ৪ মাস ১৮ দিন কারাবন্দি ছিলেন ফিরোজ। পরবর্তীতে প্ররোচনায় সম্পৃক্ত না থাকায় খালাস পান তিনি।