নরসিংদীর বেলাব উপজেলা সদরে ঢুকতে সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়কটি হলো মরজাল-পোড়াদিয়া আঞ্চলিক সড়ক। নির্মাণ কাজের এক বছর না যেতে যেতেই বিভিন্ন স্থানে রাস্তা গর্ত হয়ে ধসে পড়েছে। স্থানীরা অভিযোগ করেন, রাস্তায় নিম্নমানের উপকরণ,কাজের অনিয়ম এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণের অহেলার কারনে এমনটি হয়েছে। এই সড়কের ভাঙা অংশের গর্তে যানবাহন চলাচলের সময় যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটতে পারে । সড়কও জনপথ বিভাগ( সওজ) সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রায়পুরা উপজেলার একাংশ অর্থাৎ মরজাল বাজার হতে বেলাব উপজেলার পোড়াদিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কটি মাটি ভরাট ও পাকা করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১১৭ কোটি টাকা। সড়ক নির্মাণের কাজটি দুইটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আলাদা করে কাজ করা অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের গড়িমসি করেছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে জনগণের ভোগান্তির খবর প্রচার হতে থাকলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালের শেষের দিকে কাজটি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়। বর্তমানে সর জমিনে গিয়ে দেখা যায়,পাহাড় আমলাব বাজার হতে ১ কিলোমিটার পর গাংকুল পাড়া মো. নাসির ভূঁইয়ার বাড়ির পাশে,সাংবাদিক মকবুল হোসেনের বাড়ির পাশে এবং বাঘবের নতুন বাজার হতে ৫০০ মিটার পরে অর্থাৎ জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের বাড়ি যেতে সড়কের এক পাশ দিয়ে ভেঙে ভেতরের ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে। সড়ক সরু হয়ে গেছে ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে।গার্ডওয়াল না থাকায় মাটি সরে গিয়ে রাস্তা দেবে গেছে ফলে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙ্গন। স্থানীয় উদ্যোগে সাটিয়েছে লাল ফিতা, যে কোনো মূহুর্তে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বক্তব্য নেওয়ার পর দিনই তড়িগরি করে ভাঙ্গন স্থানে মাটি দিয়ে ঢেকে দেয় কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসী বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে পাহাড় উজিলাব বাজারে এবং বেলাব বাজারে আর সিসি সিমেন্টের ঢালায় দেওয়ায় কয়েক দফায় কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এরপর জনপ্রতিনিধিদের হাত করে ওই ঠিকাদারি সংস্থা তাড়াহুড়ো করে কোনো রকমে কাজটি শেষ করেন। ফলে ঢালায় কাজেও ফাটল দেখা দেয় কিছুদিন পর। বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগ নজরে আসলে (পিজ)বিটমিন দিয়ে ঢেকে দেয়। এই সড়কটি নির্মাণে ঠিকাদার খরচ কমাতে রাস্তার ধারে শক্ত মাটির পরিবর্তে বালু ব্যবহার করেছেন। অধিকাংশ জায়গায় গার্ডওয়াল না থাকায় মটি সরে গিয়ে ভাঙ্গন সৃষ্টি হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। বেলাব উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা জানান, সড়কটির ভাঙ্গন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ঠিকাদারির অনিয়ম আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বহীনতার অভাবে রাস্তাটি অল্প সময়ে ভেঙ্গে গেছে। বেলাববাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল এ রাস্তাটি। শিল্পমন্ত্রীর এড.নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ন এমপির হস্তক্ষেপ দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। ঠিকাদারীর অনিয়ম আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বের অবহেলার কারনে এখনি ভঙ্গন সৃষ্টি শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ ( সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলামের কাছে সড়কটির ভাঙ্গন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এ বিষয়ে জানা নেই,আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমরা আজই লোক পাঠাব রাস্তাটি দেখতে। তার পর বিস্তারিত জানা যাবে কেন এমন হলো বা কি কারণে অল্প দিনে রাস্তাটিতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
ঢাকা, বাংলাদেশ |
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ
শিরোনামঃ
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও
কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।