ঢাকা, বাংলাদেশ | শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

শিরোনামঃ

   ভূমিকম্পে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত অনেকে    ইদানীং জায়েদ খানের পাগলামি বেড়ে গেছে : হিরো আলম    বিএনপি নামক ‘কারাগারে’ বন্দী তাদের নেতারা : তথ্যমন্ত্রী    খাগড়াছড়িতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন ৭ জন প্রার্থী    মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন এমরান হোসেন মিয়া    দলের পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে : তথ্যমন্ত্রী    ৭ম বারের মতো আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতীক পেলেন রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু,    খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল    রাজশাহী আদালত চত্বরে ককটেল বিস্ফোরণ    অটোরিকশা থেকে নামিয়ে ২ যুবককে হাতুড়িপেটা    স্ত্রী বাবার বাড়ি থেকে না ফেরায় স্বামীর আত্মহত্যা    বিএনপির নেতা মিন্টুর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন    দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ    বিএনপি দেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে : তথ্যমন্ত্রী    দুপুরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিতরণ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সেলিনা বেগমকে (৪০) হত্যার দায় স্বীকার করে স্বামী ফয়েজ মিয়া ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।

অন্যের সঙ্গে ফোনে হেসে কথা বলার ক্ষোভ থেকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে সেলিনাকে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ ভৈরবে  সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিয়াজুল কাউসার তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের এই তথ্য জানান।

এর আগে পিবিআই কিশোরগঞ্জ জেলার সদস্যদের হাতে আটক হন ফয়েজ উদ্দিন।

জানা যায়, ফয়েজ ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের ছেলে। পেশায় পাদুকা ব্যবসায়ী।

সেলিনার বাড়ি একই উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভাটি কৃষ্ণনগর গ্রামে। বাবার নাম জাহের মিয়া। ২২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের তিন সন্তান।

এর মধ্যে এক ছেলে ও দুই মেয়ে। চলতি বছরের ৩১ জুলাই নিজ ঘরে ফয়েজের হাতুড়ির আঘাতে সেলিনার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় পরদিন সেলিনার ছোট ভাই নাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ভৈরব থানায় হত্যা মামলা করেন।

 

মামলার বিবরণে জানা যায়,

গত ২২ বছর আগে আসামি ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়ে সেলিনা বেগমের। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

মৃত্যুর আগে সেলিনা বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। প্রায় সময় সাংসারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।

ফয়েজ উদ্দিন পেশায় জুতার তৈরির কারিগর আর এ কারণে সেলিনা বেগম স্বামীকে সহায়তার জন্য নিজেও জুতা তৈরির কাজে সহায়তা করতেন।

আগের ক্ষোভে গত ৩১ জুলাই আবারও কথাকাটাকাটি হয় সেই জেরে ঘটনার দিন রাতে হাতুরি দিয়ে সেলিনা বেগমের মাথায় আঘাত করে।

 

এ সময় মাথা ফেটে মগজ বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

এ সময় বাচ্চাদের কান্না শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে ফয়েজ উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশের খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরের দিন সেলিনা বেগমের ভাই নাহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ফয়েজ উদ্দিনকে

প্রধান অভিযুক্ত করে অজ্ঞাত আরও ২জনকে অভিযুক্ত করে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করেন।

পিবিআই জানায়, ২০ আগস্ট মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআই কিশোরগঞ্জ জেলার উপ-পরিদর্শক (নিঃ) আবু কালামকে।

ফয়েজকে ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে ঢাকার লালবাগ থানার নবাবপুর রোডের ক্লাবপাড়া নামক স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জবানবন্দিতে ফয়েজ উল্লেখ করেন, নিজ বাড়িতেই তার জুতার কারখানা। ঘটনার রাতে ফয়েজ চার ডজন জুতা সেলিনার কাছে নিয়ে এসে কাগজে প্যাকেট করার জন্য বলেন।

এই কথা বলে ফয়েজ ঘর থেকে বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে এসে দেখেন সেলিনা ফোনে হেসে হেসে কথা বলছেন। তখনো জুতার প্যাকেট করা হয়নি।

এতে ফয়েজ ক্ষুব্ধ হন এবং কার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলছিলেন জানতে চান। ফয়েজের ধারণা সেলিনা পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলছিলেন।

এই নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাতে থাকা জুতার তৈরির কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি দিয়ে সেলিনার মাথায় আঘাত করেন।

পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, আদালতে ফয়েজের জবানবন্দির মাধ্যমে মামলাটির অনেকটা অগ্রগতি হলো।

এখন চেষ্টা থাকবে যত দ্রুত সম্ভব আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া। আমরা এখন সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বাদী নাহিদুল ইসলাম বলেন, তার বোনের ২২ বছর আগে বিয়ে হয়েছে। ফয়েজ উদ্দিন নিজেই বহু নারীতে আসক্ত ছিলেন।

এ নিয়ে তার বোনের সঙ্গে দাম্পত্য বিরোধ ছিল। প্রায় সময় আমার বোন তার স্বামী ফয়েজ উদ্দিনের হাতে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।

অন্য নারীর সঙ্গে কথা বলতে বারণ করলেই নির্যাতন চালানো হতো। তার বোন কখনও অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলতেন না।

এনএএন টিভি 


2 Replies to “ভৈরবে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা”

Comments are closed.

প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও
কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।