বাংলা নাটক, গান, সংস্কৃতির চর্চা নিউইয়র্কে চলছে বহুদিন।
লোকে টিকিট কেটেও অনুষ্ঠান দেখেন।
বাবা–মায়েরা ছেলেমেয়েদের বাংলা গান, নাচ ও আবৃত্তি শেখান বৈতনিক বিদ্যালয়ে।
বাংলা পত্রিকা, টেলিভিশন, এমনকি নানা ইস্যুতে দলাদলিও এখানে আছে।
তাঁদের সবার সঙ্গে বসে আপনি যখন ‘লাল জমিন’ দেখবেন, বুঝবেন,
যে মহান ত্যাগের ইতিহাস আমাদের পূর্বসূরিরা রচনা করেছিলেন,
তার কাছে ওই সব দল অদলবদল কত তুচ্ছ, কত আগাছা।
নাটকের শেষে আমার পা দুখানা সটান দাঁড়িয়ে গেল।
হলভর্তি দর্শকের তুমুল হাততালি।
মঞ্চে মোমেনা চৌধুরীর হাত দুটি বুকের ওপর ভাঁজ করে রাখা,
সেখানে শ্বাসের দ্রুত ওঠানামা বোঝা যায়।
তাঁর কণ্ঠও নিশ্চয়ই শুকিয়ে কাঠ, কিন্তু চোখে আনন্দের ঝিলিক।
তিনি জানেন, এবার দর্শকদের কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে আসবেন,
নিজেদের মুগ্ধতাও জানাবেন।
আমার তখন মনে হলো, দূর ভবিষ্যতে এই অভিনয় মোমেনা নিজেও কি করতে পারবেন?
যখন বয়স হবে? একক অভিনয় বলে তো আর এ নাটক টুলের ওপর বসে বসে কেবল সংলাপ আওড়ানো নয়।
মঞ্চজুড়ে ৭০ মিনিট ধরে লাফঝাঁপ, হামাগুড়ি, দৌড়াদৌড়ি।
নাটকের শেষে আমার পা দুখানা সটান দাঁড়িয়ে গেল।
হলভর্তি দর্শকের তুমুল হাততালি।
মঞ্চে মোমেনা চৌধুরীর হাত দুটি বুকের ওপর ভাঁজ করে রাখা, সেখানে শ্বাসের দ্রুত ওঠানামা বোঝা যায়।
তাঁর কণ্ঠও নিশ্চয়ই শুকিয়ে কাঠ, কিন্তু চোখে আনন্দের ঝিলিক।
পরে মোমেনা চৌধুরীর সঙ্গে আলাপে জানলাম,
শিগগির নাটকটির ভিডিও রেকর্ডিং হবে।
মান্নান হীরার লেখা নাটকটির ছাপানো কপিও পাওয়া যায়।
তিনি চান, বাংলার সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক এই নাটক।
এ কারণেই তিনি পথে নেমেছেন।
দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারত, কোরিয়া, দুবাই, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছে গেছে ‘লাল জমিন’।
এ পর্যন্ত ৩৩০টি মঞ্চায়ন করেছেন, আরও করবেন।
বললেন, ‘টিমের সবাইকে নিয়ে দেশের নানা জায়গায় গিয়ে মঞ্চস্থ করার মতো বাজেট নেই।
তবু মনের জোরেই সব বাধা পেরোচ্ছি। আমাদের পরের প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, অভিনয় করে আমি ওদের তা দেখাব।’
টিমের সবাইকে নিয়ে দেশের নানা জায়গায় গিয়ে মঞ্চস্থ করার মতো বাজেট নেই।
তবু মনের জোরেই সব বাধা পেরোচ্ছি। আমাদের পরের প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি,
অভিনয় করে আমি ওদের তা দেখাব।
মোমেনা চৌধুরী
শুনে মনে হলো, তিনি যেন নিজেকেই খুঁজে পেয়েছেন।
এই আত্মশক্তিতে বলীয়ান বলেই এমন আনন্দে কাজ করতে পারছেন।
মোমেনা নিজেও সে কথা বললেন, ‘আমার গা শিউরে ওঠে, যখন বীরাঙ্গনার সংলাপ কণ্ঠে তুলি।
মনে হয়, একাত্তরের বধ্যভূমি থেকে জেগে উঠে ওরা আমার ওপর ভর করেছে। নিজের উচ্চারণে আমি নিজেই চমকে যাই।’
মোমেনা চৌধুরী মনে করিয়ে দিলেন, একাত্তরের জননীদের জন্য, শহীদদের জন্য আমাদের সবারই অনেক কিছু করার আছে।
মোমেনা চৌধুরী মনে করিয়ে দিলেন, একাত্তরের জননীদের জন্য, শহীদদের জন্য আমাদের সবারই অনেক কিছু করার আছে।
যে শপথে, যে ত্যাগে এই স্বাধীন দেশ তাঁরা আমাদের দিয়ে গেছেন—সে দেশকে এগিয়ে নেওয়া,
সেই বিজয়কে স্বার্থক করাই আমাদের নিজের জীবনকে স্বার্থক করবে।
মোমেনা সেই আলোর পথের সন্ধান পেয়েছেন, তাই সেই কাজে যেন ব্রত নিয়েছেন।
এ নাটকের হাজারো মঞ্চায়ন হোক।
One Reply to “মোমেনা চৌধুরীর লাল জমিন এখন নিউইয়র্কে”
Comments are closed.