মুন্সিগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর তীরে বিআইডব্লিউটিএ’র উচ্ছেদ অভিযান শেষ হওয়ার দুই দিন পর ভেঙে ফেলা অবৈধ স্থাপনার টিনসেডের নিচ থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার কাঠপট্টি এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতের স্বজনদের দাবি, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে ফেলা মালামালের নিচে ফেলে রাখা হয় তাকে।
অথবা উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে চাপা পড়ে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানিয়েছেন পরিবার।
নিহতের ছেলে ফজলুর রহমান বেপারী বলেন,
‘দুইদিন ধরে আমার বাবা নিখোঁজ রয়েছে, আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি,
আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে কোথাও সন্ধান পাওয়া যায়নি, মোবাইলেও যোগাযোগ করেছি ফোনটি বন্ধ পেয়েছি তার,
আমি ও আমার পরিবার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
কেউ আমার বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে কিনা এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার অনুরোধ রইলো আমাদের।’
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, বিআইডব্লিউটিএ’র উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে গত ২৩মে ঝড়ো বাতাসে উড়ে আসা টিনশেডের বেড়ার নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে নিহতের।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে সকালের সন্দেহ হয় তাদের।
পরে টিনশেডের নিচে চাপা পরে থাকতে দেখা যায় মরদেহটি। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে খবর দেয়া হয় পুলিশকে। পরে অর্ধ গলিত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করেছে সিআইডি, পিবিআই, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নিহতের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে বোঝা যাবে ঘটনার প্রকৃত রহস্য।
প্রাথমিকভাবে ধারণার কথা জানিয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তারিকুজ্জামান বলেন,
‘মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হবে পরিবারের কাছে। পরবর্তীতে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।
তবে কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নিহতের স্ত্রী সহ চারটি ছেলে ও দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার।’
এদিকে, নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক মোঃ শহীদুল্লাহ বলেন,
‘উচ্ছেদ অভিযান শেষ হয়েছে দুই দিন আগে। অভিযান চলাকালীন সময়ে আমরা কোন ধরনের আহত হওয়ার তথ্য পাইনি।’
‘এছাড়া, যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নদীর তীরের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।’
‘কেউ যদি কোন মিথ্যা অভিযোগ করেও থাকে, তাহলে বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।’
One Reply to “বিআইডব্লিউটি ‘র ভেঙে ফেলা স্থাপনার নিচ থেকে ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার”
Comments are closed.