আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বন্দরের লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান এশিয়ার সমুদ্রবন্দরের মধ্যে পেছনের সারিতে। এটি বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতার ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরে। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিচালন ব্যয় অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই বন্দরের লজিস্টিক খাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ‘জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা’ প্রণয়ন করা দরকার।
সোমবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বন্দরের লজিস্টিক খাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনা: ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যে কোনো রাষ্ট্রের সক্ষমতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বন্দরের লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর বিশ্বের ৬৪তম ব্যস্ত বন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে, কনটেইনার হ্যান্ডলিং বিবেচনায় দক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনার অভাব, পোর্ট ইয়ার্ডের স্বল্পতা, পোর্ট শেড ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অনুপস্থিতি ইত্যাদি কারণে এশিয়ার সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্যে এ বন্দরের অবস্থান বেশ পেছনে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক সক্ষমতার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রমে পরিচালন ব্যয় উল্লেখজনক হারে কমানো সম্ভব। তিনি লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম ইকোনমিক করিডোরের কার্যক্রম সম্পন্নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালটি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ব্যবহারের জন্য উপযোগী হয়ে যাবে। মোংলা বন্দরের পিপিপি মডেলের আওতায় এরই মধ্যে একটি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশের বন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে ডিপি ওয়ার্ল্ড, পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল এবং রেড সি পোর্টের মতো বিদেশি বেশকিছু প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। দেশের বন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সমন্বিত কৌশল প্রণয়ন, পিপিপি মডেলের ভিত্তিতে অবকাঠামোর উন্নয়ন ও কানেকটিভিটি সম্প্রসারণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনায় অংশ নেন গ্রুপ বিজনেস ডেভেলপমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি পেং জি, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলী জওহর রিজভী, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ এবং ডিপি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শামীম উল হক। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আরমান হক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।