চুক্তি ও বিদ্যুতের মূল্য নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই বাংলাদেশের সঞ্চালন লাইনে পরীক্ষামূলকভাবে আসতে শুরু করেছে ভারতের আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে ভারত থেকে আসা সর্বোচ্চ ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়েছে। এতে উত্তরবঙ্গে বিদ্যুতের ঘাটতি অনেকটাই কাটবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলার আদানি পাওয়ার লিমিটেডের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। মূলত শুধু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির জন্য এই কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারি তথ্য বলছে, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই ঝাড়খণ্ডে স্থাপিত আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ।
কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটি ইতোমধ্যে উৎপাদনে এসেছে। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির সঙ্গে করা চুক্তিমাফিক বিদ্যুৎ এখন দেশে আসতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিদ্যুৎ সরবরাহের সঞ্চালন লাইন চালু করা করা হয়। প্রথমে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়ে পরীক্ষামূলক সঞ্চালন কাজ শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত দেশে সর্বোচ্চ ৩০০ মেগাওয়াট হারে আসছে।
এছাড়া আদানির এ বিদ্যুৎ দেশে নিয়ে আসতে মোট ২৪৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। যার ১০৮ কিলোমিটার অংশ পড়েছে ভারতে। আর বাকি ১৩৬ কিলোমিটার অংশ বাংলাদেশে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর দিয়ে এ বিদ্যুৎ আসছে বগুড়ায় জাতীয় গ্রিডের নবনির্মিত উপকেন্দ্রে।
স্থানীয়রা জানান, এ বিদ্যুৎ আসার ফলে পুরো দেশবাসীর উন্নয়ন হবে। লোডশেডিং কমে আসবে। এছাড়া কৃষিকাজে সুবিধা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে চলতি মাসেই এই বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে দেশে আসার কথা রয়েছে। আদানির বিদ্যুতের দাম নিয়ে সমালোচনার জবাবে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো বলছে, উভয়পক্ষের সবদিক বিবেচনা করেই কাজ করছেন তারা।
আর চলতি মাসে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আদানির বিদ্যুৎ আসলে গরম, রমজান ও সেচ মৌসুমে ঘাটতি বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে বলে আশা পাওয়ার সেল কর্তৃপক্ষের।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, গরম, রমজান ও কৃষি খাতে বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলার জন্য এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ যোগান দেয়া হবে। এছাড়া কেউ যাতে এ বিদ্যুৎ অপব্যবহারের সুযোগ নিতে না পারে, তার জন্যও সর্তক থাকার কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশের চাহিদা মাফিক নবনির্মিত এই গ্রিড দিয়ে পরবর্তীতে আদানি গ্রুপ সৌর বিদ্যুৎ বিক্রি করবে বলেও পরিকল্পনা রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।