ঢাকা, বাংলাদেশ | সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

শিরোনামঃ

   দৈনিক উপার্জন ওরির ৫০ লাখ রুপি    ছেলেকে প্রকাশ্যে আনলেন নুসরাত, জন্মের তিন বছর পর    ভাবীর পরকীয়া প্রেম জেনে যাওয়ায় দেবরকে হত্যা    ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট ইবুতে ফের অগ্ন্যুৎপাত, ৫ কিলোমিটার উঁচুতে ছাই    গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল প্রাইভেটকার আরোহীর    নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ চলছে; কেন্দ্রে ক্ষমতায় যাচ্ছে কারা, নির্ধারণ হবে আজ    মেক্সিকোতে বন্দুক হামলায় নিহত ৮ জন    রাহুল গান্ধীর বয়সের সমান আসন পাবে না কংগ্রেস –দাবি নরেন্দ্র মোদির    বলোগনা ৬০ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরল    চুয়াডাঙ্গায় চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে পা‌খিভ্যান ছিনতাই    জিপিএ-৫ পেলেন ৪০ দিন আগে মারা যাওয়া তানাজ    সন্ধ্যার মধ্যে ৩ বিভাগে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস    ২৬ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হতে পারে    দেশ থেকে সৌদি পৌঁছেছেন ১২ হাজার ৬৪৯ হজযাত্রী    এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন শুরু আজ, যেভাবে করবেন

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। গত দুই মাসের ব্যবধানে শুধু নিত্যপণ্য নয়, দুই দফা বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। বেড়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলপি গ্যাসের দামও।

এতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস নির্ভর নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুই মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৮ থেকে ৮৭ শতাংশ।

দুই

গত ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ ফেব্রুয়ারির বাজারদরের তুলনামূলক চিত্রে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ব্যবধানটি স্পষ্ট। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে মূল্যস্ফীতি, নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের দৈনন্দিন জীবনে যা বেশ চাপ সৃষ্টি করছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাজার তদারকি জোরদার করার পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি এবং খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রমের আওতা বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

মূল্যস্ফীতি মূলত কোনো পণ্য বা দ্রব্যের দাম বাড়ার গতির হিসাব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) অর্থবছরকে ভিত্তি বছর ধরে ৪২২টি নিত্যপণ্যের ওপর ভিত্তি করে এই হিসাব করে থাকে।

বিবিএসের তথ্য মতে, বিদায়ি বছরের আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৫২ শতাংশ, চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা ৮.৫৭ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে পণ্যের দাম বাড়ার গতি কমেছে ০.৯৫ শতাংশ।

তবে বাজার পরিস্থিতি এবং গত জানুয়ারি মাসে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি কমবে না বলে মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা, বরং তা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি।

দুই মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫৭ শতাংশ দাম বেড়ে এখন ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দাম ২৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি এখন ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা।

গত ২২ ডিসেম্বর ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, দুই মাসে ২২ শতাংশ দাম বেড়ে এখন তা ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। আমদানি করা চীনা আদার দাম ৮৭ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়।

একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশি আদার দাম। ৩০ শতাংশ দাম বেড়ে এখন তা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দুই মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে রসুনের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

দুই মাস আগে আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

দুই মাসের ব্যবধানে দেশি রসুনের দাম ৭১ শতাংশ বেড়ে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

বাজারে চিনির সংকট এখনো কাটেনি। প্যাকেটজাত চিনি উধাও।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে খোলা চিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। দেশি বলে পরিচিত চিকন মসুর ডাল কেজিতে ৮ শতাংশ দাম বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবির বাজারদরের তথ্যে দেখা গেছে, আমদানি করা রসুনে গত এক বছরে ৬২ শতাংশ দাম বেড়েছে। টিসিবির বাজারদরে অবশ্য একসঙ্গে দুই মাসের তথ্য নেই।

গত মাসে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আমদানি করা রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৯০ টাকায়। এক বছরে দেশি রসুনের দাম ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি এখন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, এক মাস আগে ছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

গত এক বছরে আমদানি করা আদার দাম ১৪৭ শতাংশ বেড়েছে। এখন তা সর্বোচ্চ ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেও তা ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। গত এক বছরে দেশি আদার দাম ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, গত মাসে বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। টিসিবির তথ্যে জানানো হয়, গত এক বছরে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এখন হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়, গত মাসে যা ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো সুযোগ নেই। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার ফলে উৎপাদন খাতে এক ধরনের প্রভাব পড়বে। তা ছাড়া শীতকালীন সবজির সরবরাহ কম হবে। নতুন ধান আসতে আরো তিন-চার মাস। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো কারণ দেখছি না। বরং তা বাড়তে পারে, যদি সরবরাহ চেইন ঠিক না থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আসছে রমজান মাসে নিত্যপণ্যের চাহিদা কিছুটা বেশি থাকবে। সুতরাং সরকারের উচিত, এই সময়ে সরবরাহ ঠিক রাখা। আমদানি ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা। আবার সরকার চাইলেও বেশি আমদানি করতে পারবে না। তার অন্যতম কারণ হলো ডলারের কিছুটা সংকট এখনো আছে। তবে এই সরকার চেষ্টা করছে, দেখা যাক সমানে কী হয়।’


One Reply to “দুই মাসে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত”

Comments are closed.

প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও
কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।