বর্ষার আগেই যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধশতাধিক বসতভিটাসহ ফসলী জমি বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনের মুখে পড়েছে নদীর তীরবর্তী এনায়েতপুর স্পার এলাকা থেকে পাঁচিল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকার শতশত স্থাপনাসহ ফসলি জমি।
স্থানীরা বলছেন,
দুই যুগ ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকার পর ভাঙন কবলিতদের দাবির প্রেক্ষিতে গত বছর ৬৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়।
কিন্তু সঠিক সময়ে কাজ শুরু না করায় এবারো ভাঙনের কবলে পড়ছে জনপদ। এ অবস্থায় আতঙ্কে দিনপার করছে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
ব্রাহ্মণ গ্রামের মনিরুল ইসলাম, হাসমত, সিদ্দিক ও আব্দুর রউফ জানান, দুই যুগ ধরে এনায়েতপুর স্পার থেকে দক্ষিনাঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে ভাঙনে হাজার হাজার বসতভিটাসহ ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান হাট-বাজার বিলীন হয়ে গেছে।
হাজার হাজার মানুষ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় দীর্ঘ দিনের দাবিতে সরকার এনায়েতপুর স্পার এলাকা থেকে পাঁচিল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকা
তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য সাড়ে ৬শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।
গত বছর কাজের টেন্ডারও হয়েছে। কিন্তু পাউবো ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি।
তাদের গাফিলতির কারনেই গত এক সপ্তাহে আগে স্পার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়।
ভাঙনে অর্ধশতাধিক এলাকা বিলীন হয়ে গেছে।
বর্ষার আগেই যে ভাঙন দেখা দিয়েছে বর্ষা মৌসুমে ভাঙন শুরু হলে অন্তত ১০টি গ্রামের হাজার হাজার বসতভিটা বিলীন হয়ে যাবে।
তাদের অভিযোগ ভাঙন শুরু হলেও পাউবো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
ব্রাহ্মন গ্রামের নুর হোসেন, নুর ইসলাম, পাশান, মনতাজ আলী ও মোহাম্মদ আলী হোসেন জানান,
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
অনেকেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতরভাবে বসবাস করছে।
অনেকে আশ্রয়ের খোজে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছে।
কিন্তু কেউ তাদের খোঁজ পর্যন্ত নিচ্ছে না।
এ অবস্থায় ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভাঙনকবলিতরা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান,
ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ চলমান রয়েছে এবং জিও টিউব সংযোজন করা হয়েছে।
ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। ভাঙনরোধের সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।