ঢাকা, বাংলাদেশ | সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

শিরোনামঃ

   ইনস্টাগ্রাম প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হচ্ছে রিভিল নামের ফিচার    মাঝ আকাশে বিমান থেকে সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি যাত্রী!    শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সেই ব্যক্তি মারা গেছেন    দৈনিক উপার্জন ওরির ৫০ লাখ রুপি    ছেলেকে প্রকাশ্যে আনলেন নুসরাত, জন্মের তিন বছর পর    ভাবীর পরকীয়া প্রেম জেনে যাওয়ায় দেবরকে হত্যা    ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট ইবুতে ফের অগ্ন্যুৎপাত, ৫ কিলোমিটার উঁচুতে ছাই    গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল প্রাইভেটকার আরোহীর    নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ চলছে; কেন্দ্রে ক্ষমতায় যাচ্ছে কারা, নির্ধারণ হবে আজ    মেক্সিকোতে বন্দুক হামলায় নিহত ৮ জন    রাহুল গান্ধীর বয়সের সমান আসন পাবে না কংগ্রেস –দাবি নরেন্দ্র মোদির    বলোগনা ৬০ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরল    চুয়াডাঙ্গায় চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে পা‌খিভ্যান ছিনতাই    জিপিএ-৫ পেলেন ৪০ দিন আগে মারা যাওয়া তানাজ    সন্ধ্যার মধ্যে ৩ বিভাগে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস

গেল মৌসুমে ধানের দাম কম থাকায় এবার লোকসানের শঙ্কা নিয়ে রোপা আমন চাষ করছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা।

সার, বিদ্যুৎ ও ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার ধান উৎপাদনে বিঘাপ্রতি ৪-৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

সে অনুপাতে আগামী মৌসুমে ধানের দাম বাড়ানোর দাবি কৃষকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভরা বর্ষা মৌসুমে আবাদের চাহিদা মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন চাষে জমিতে পানির জন্য জয়পুরহাটের চাষিদের পুরোপুরি সেচযন্ত্রের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

এতে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রের পেছনে আমন চাষে অতিরিক্ত টাকাও গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিক বাবদও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার বিঘাপ্রতি ব্যয় বেড়েছে ৪-৫ হাজার টাকা।

তবুও কৃষকরা শঙ্কা নিয়েই তাদের জমিতে আমন চারা রোপণ করে যাচ্ছেন। আমন ধান বর্ষা মৌসুমের প্রধান ফসল।

এ ফসলে প্রচুর পানির প্রয়োজন। আমন চাষের মূল সময়ও জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত।

ভরা বর্ষার সময়েই আমন ধান রোপণ হয়ে থাকে।

কিন্তু এবার ভরা বর্ষায়ও শুষ্ক আবওহাওয়া।

এর বিরূপ প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়েছে কৃষকদের জীবিকায়। একটু সময় পার হলেই এ ফসল থেকে সঠিক উৎপাদনের সম্ভাবনাও থাকে না বলে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

কালাই উপজেলার বালাইট গ্রামের কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, ‘এলাকায় কমপক্ষে দেড় শ কৃষক বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচের আওতায় প্রায় সাড়ে ৩০০ বিঘা জমি চাষাবাদ করেছেন।

সেচ মালিকরা পানির বিনিময়ে শতক প্রতি ১৫ টাকা হারে চাইলেও পরে বর্ষার পরিস্থিতি বুঝে শতক প্রতি ২০ টাকা করে দাবি করেন।

এতে প্রতি বিঘায় তাদের দিতে হচ্ছে ৬৬০ টাকা হারে।

অন্যান্য খরচ তো আছেই। তিনি প্রায় ১২ বিঘা জমি ডিজেলচালিত সেচের আওতায় চাষাবাদ করছেন।

ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা গ্রামের কৃষক আবু বক্কর বলেন, ‘আমন ধান মূলত বর্ষার পানিতে হয়।

কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই।

এ কারণে বিঘা প্রতি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকার বিনিময়ে কৃষকরা সেচ মালিকদের কাছ থেকে জমিতে সেচ নিচ্ছেন।

অনেকেই বর্ষার জন্য অপেক্ষা করছেন। আকাশের পানি নামলে তারা ধান লাগাবেন।

আবার অনেকেই আবাদ করবেন কি না তা নিয়েও দোটানায় আছেন।

পাঁচবিবি উপজেলার চাটখুর গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান বলেন,

‘স্বাভাবিকভাবে হাল দিয়ে জমি প্রস্তুত করা থেকে চারা রোপণ পর্যন্ত বিগত বছরগুলোতে প্রতি বিঘায় ব্যয় হতো ৮-৯ হাজার টাকা।

কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় এবার সেচের কারণে এই খরচ ১২-১৩ হাজার বা তারও বেশি হচ্ছে।

অথচ আমন ফসল কৃষকদের জন্য একটি নিশ্চিত ফসল।

এ অবস্থায় আমন আবাদে বাড়তি খরচের বোঝা চাপছে কৃষকদের ওপর।’

কালাই পৌর শহরের আঁওড়া গ্রামের কৃষক মোক্তাদির বলেন, গত দুই বছর ধরে ধানের দাম কম যাচ্ছে।

অথচ সার, ডিজেল, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ অবস্থা চললে কৃষক এক সময় থেমে যাবে।

তখন সবারই টনক নড়বে।

বৃহত্তর বগুড়া অঞ্চলের আবওহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, ‘বৈশ্বিকভাবেই এবার উষ্ণতা বেশি।

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েই মূলত বৃষ্টি কম। এর প্রভাবটা কৃষিতে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।

তবে কিছুদিনের মধ্যে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটে এবার আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমি।

উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ২১ হাজার ২৩৫ টন চাল। অথচ ৫ আগস্ট পর্যন্ত মাঠে আমনের চারা রোপণ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি।

গত বছর আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে পুরো জেলার অধিকাংশ জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছিল।

জয়পুরহাট কৃষি অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘মাটি উর্বর হওয়ায় জেলার উঁচু-নিচু সব জমিতেই আমন চাষাবাদ হয়।

বন্যা বা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলেও এ জেলায় তেমন একট প্রভাব পড়ে না।

বৃষ্টি কম হলে খেতে রোগ-বালাইও কম হয়। তিনি আরও বলেন, বাজারে ধানের দাম কম হলেও এবার আমন আবাদে এর প্রভাব পড়বে না।

এনএএন টিভি


প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও
কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।