গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-মতিঝিল বিভাগ।
বুধবার (২৪ মে) বিকেলে কদমতলি থানার গিরিধারা আবাসিক এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন: মো. নজরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ বাহাদুর মিয়া।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে পিতলের থালা, গামলা, ঘটি, আগরদানি, তাবিজ লেখার বই ও ২৯টি তাবিজের খোল উদ্ধার করা হয়।
সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার এস.এম হাসান সিদ্দিকী বলেন,
গত সোমবার ভিকটিম নুরুল আমিন পলাশ গোয়েন্দা পুলিশের কাছে প্রতারণা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, ভিকটিম নুরুল আমিন পলাশ গত বছর আগস্টে তার ছোট বোনের ছেলেকে জিনের আসর ছাড়াতে কবিরাজ আ. জলিলের দ্বারস্থ হন।
জলিল বলেন, তাকে বড় জিনে আসর করেছে। এরপর তাদের বড় জিনের কবিরাজ নজরুলের মোবাইল ফোন নম্বর দেয়।
জলিল বলেন, এ কবিরাজ মাটির নিচের গুপ্তধনের সন্ধানও দিতে পারে।
এরপর এক দিন নজরুল ও তার সহযোগী বাহাদুর পলাশের বোনের বাসা দিয়াবাড়িতে যায়।
সেখানে পলাশের ভাগিনাকে ঝাড়-ফুঁকের একপর্যায়ে বাহাদুর নাক-মুখ দিয়ে কৌশলে রক্ত বের করে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা ভিকটিমের মনে বিশ্বাস জন্মায়।
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও জানায়, কবিরাজ নজরুল ভিকটিম পলাশকে বলে তার সাথে একজন জিন-পরি আছে।
যার মাধ্যমে সে পলাশের বাড়িতে থাকা মাটির নিচের পুরোনো গুপ্তধন উঠিয়ে দিতে পারবে।
তাদের কথামতো পলাশ বরিশালের কাঁঠালিয়া থানায় তার গ্রামের বাড়ির ঠিকানা দেন। কিছুক্ষণ পর নজরুল জানায়,
পলাশের বাড়ির উত্তর পাশে মাটির নিচে একটি গুপ্তধনের ঘটি আছে। ঘটিটি জিনেরা পাহারা দিয়ে রাখছে।
গুপ্তধন ওঠাতে হলে পাহারারত ৩০-৪০ জন জিন মারা যাবে। মারা যাওয়া প্রতি জিনের সাদকা হিসেবে গরু দিতে হবে।
ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় নজরুল ও বাহাদুর ভিকটিম পলাশের ঘরের পাশ থেকে মাটি খুঁড়ে কথিত গুপ্তধনের ঘটি এনে আলমারিতে রাখে।
এরপর জিনদের গরু সাদকা বাবদ ও গুপ্তধনভর্তি ঘটির লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে পলাশের কাছ থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন,
গ্রেফতার ব্যক্তিরা সহজ-সরল মানুষকে জিন-পরির বাদশা পরিচয় দিয়ে কৌশলে অলৌকিক ক্ষমতার ক্যারিশমা দেখিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিত।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডিএমপির ওয়ারী থানায় মামলা হয়েছে। পলাতক মো. আ. জলিল ও মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
One Reply to “ঢাকায় গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ”
Comments are closed.