রাজধানীর গুলিস্তানের বিআরটিসি বাস কাউন্টারের দক্ষিণ পাশে সিদ্দিকবাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে কিভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি এখনো খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ভবনটি পরিদর্শন করে বলেছে,
ভবনের বেজমেন্টে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।
তবে ভবনের ধ্বংসস্তূপ, আহত ও নিহত হওয়ার ধরণ দেখে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলটি মনে করছে,
ভবনের বেজমেন্টের বদ্ধ কোনো কক্ষে গ্যাস জমে সেটি ‘গ্যাস চেম্বারে’ পরিণত হয়েছিল।
সেখানে যেকোনো উপায়ে স্পার্ক (আগুনের স্ফুলিঙ্গ) হওয়ার পরই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এক্ষেত্রে সম্ভাব্য পাঁচটি উপায়ে গ্যাস জমতে পারে বলে মনে করছে তারা।
সিদ্দিকবাজারের কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনের বিস্ফোরণ স্থলে সিটিটিসি ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল জানায়-
১. ভবনের মাটির নিচে পানির ট্যাংক থেকে গ্যাস নির্গত হতে পারে। ২. দুটি ভবনের মাঝখানে একটি সেপটিক ট্যাংক ছিল, সেখান থেকে গ্যাস নির্গত হতে পারে। ৩. বিচ্ছিন্ন হওয়া কোনো গ্যাসের লাইন থেকে গ্যাস জমতে পারে বা দেয়ালে মিথেন গ্যাস জমে থাকতে পারে। ৪. পয়:নিষ্কাশন লাইনের পাইপ লিকেজ হয়ে গ্যাস জমতে পারে এবং ৫. ভবনে থাকা বড় জেনারেটর থেকেও কোনোভাবে গ্যাস জমতে পারে।
সিটিটিসির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরী বলেন, যেকোনো উপায়েই হোক ভবনের আবদ্ধ কক্ষে গ্যাস জমেছিল।
সেখানে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা অন্য কোনো উপায়ে স্পার্ক থেকে ভবনে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে।
এ বিস্ফোরণ কোনো নাশকতা নয় বলেও প্রাথমিকভাবে মতামত দিয়েছেন এডিসি রহমত উল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, কোনো বিস্ফোরক বা আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) সার্কিটের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কোনো লাশের আঘাতের ধরনও বলছে এটি গ্যাস জমে বিস্ফোরণ হয়েছে।
দগ্ধ ব্যক্তিদের আহত হওয়ার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, গ্যাসের স্তরটি তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতায় ছিল। এতে মনে হয়েছে এ বিস্ফোরণ মিথেন গ্যাস থেকে হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
এতে ভবনের দুই পাশে আরও দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
আহত হয়েছেন অনেকে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ২০ জন এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।