অক্টোবরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

চলতি মাসের ২৬ দিনে ১৩ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। এ বছরের মধ্যে আক্রান্ত ও মৃত্যু সবচেয়ে বেশি চলতি মাসে। আগামী মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন কীটতত্ত্ববিদরা।

রাজধানীর হাসপাতালগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ডিএনসিসি হাসপাতালে। বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী এখন। সারাদেশ থেকে এখানে এসেছেন রোগীরা।

ডিএনসিসি হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সোহেল আসকার বলেছেন, প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছে, এই মুহূর্তে আমাদের হাসপাতালে বিগত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী আছে। এখন গরম পড়তেছে, বাসার আশপাশে প্রচুর পানি জমে থাকতেছে এবং আগামী এক মাসও যদি গরম পড়ে, ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, এ সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কমানো যাচ্ছে না মৃত্যুও। গত মাসের চেয়ে এ মাসে মৃত্যু দ্বিগুণের কাছাকাছি।

ডা. সোহেল আসকার বলেন, ডেঙ্গু রোগীর জন্য দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় অত্যন্ত মূল্যবান যদি জটিল পরিস্থিতিতে থাকে। নিকটবর্তী যে হাসপাতাল আছে প্রথমে ওইখানে উপস্থিত হতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তারপরে যদি বলে তখন মুভ করতে হবে। নিজের থেকে মুভ করা ভালো নয়। আমার ধারণা, রোগীগুলো নিজের থেকে মুভ করতেছে। অনেক দূর থেকে ঢাকায় আসতেছে, এইখানে একটা সমস্যা হচ্ছে।

আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়লেও নেই মশা মারার আয়োজন। সারাদেশেই বেড়েছে মশার উৎপাত। গবেষণা বলছে, আগামী মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বললেন, এডিস মশার ঘনত্বের যে ইনডেক্সটি এখন রয়েছে, সেটি ডেঙ্গু ছড়ানোর জন্য বেশ উপযোগী। একদিকে ডেঙ্গু রোগী, এডিস মশার ঘনত্ব বেশি এবং উপযোগী পরিবেশ এই তিনটা থাকার কারণে এপিডেমোলজিক্যাল যে ট্রায়াঙ্গেল আমরা দেখছি সেখান থেকে আমরা যে পূর্বাভাস তৈরি করছি, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ হওয়ার একটি ঝুঁকি আছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন দুই হাজারের বেশি রোগী।