তীব্র গরমে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বাড়ায় নাকাল জনজীবন।
একদিকে জ্বালানি সংকট, আরেকদিকে রক্ষণাবেক্ষণের কারণে দেশে বন্ধ প্রায় ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এতে ২৫ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা থাকলেও ১৬ থেকে ১৭ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম অবস্থা বিদ্যুৎ বিভাগের।
বাইরে দাবদাহ। ঘরে অসহনীয় লোডশেডিং। দুইয়ে মিলে নাকাল জনজীবন। এতে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সবারই অবস্থা করুণ।
গ্রাহকরা জানান, এক ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ যাচ্ছে। তীব্র গরমের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের কারণে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার মূল শর্ত পর্যাপ্ত জ্বালানির সংস্থান নিশ্চিত করা।
তবে জ্যৈষ্ঠের গরমে ঘরে-বাইরে যখন এমন নাজেহাল পরিস্থিতি, তখন বিদ্যুৎখাত নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে নানা প্রশ্ন।
দেশে বিদ্যুৎ সক্ষমতার ৪৭ শতাংশই গ্যাসনির্ভর হলেও, চাহিদার বিপরীতে অর্ধেক জোগান দিতে পারছে পেট্রোবাংলা।
ফলে গ্যাস সংকট আর রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বন্ধ দেশের প্রায় ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আর এসব কারণেই ২৫ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা থাকলেও ১৬ থেকে ১৭ হাজারের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এতে দিনে লোডশেডিং করতে হচ্ছে দেড় থেকে ২ হাজার মেগাওয়াট। তবে সামনে অপেক্ষা করছে আরও খারাপ সময়।
কয়লা সংকটে ধুঁকতে থাকা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দু-এক দিনের মধ্যে, যা চালু হতে অপেক্ষায় থাকতে হবে মাসখানেক।
শনিবার (৩ জুন) ঢাকার সাভারের খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে নবায়নযোগ্য শক্তি গবেষণা ল্যাবরেটরি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ
ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি অংশ বন্ধ রয়েছে।
আগামী ৫ জুনের পর আরেকটি অংশও জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে।
এছাড়া এলসি খুলতে দেরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কয়লা আমদানি করতে আরও অন্তত ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবে।
কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে লোডশেডিং বেড়েছে। প্রায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে।
এদিকে বিদ্যুৎ খাতে বর্তমানের নাজুক পরিস্থিতির জন্য নীতিনির্ধারকদের ভুল নীতিকে দায়ী করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এজাজ হোসেন।
তিনি বলেন, গত বছরও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ভালো পাওয়া গিয়েছিল।
তবে কয়লার জোগান নিশ্চিত করতে না পারায় বন্ধ হওয়ার পথে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।