ইন্দোনেশিয়ার রক্ষণশীল প্রদেশ আচেহ-তে গত ২৬ আগস্ট দুই পুরুষকে প্রকাশ্যে ৭৬টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে।
সমকামিতার অভিযোগে তাদেরকে শরিয়া আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং প্রকাশ্যে প্রত্যেক যুবককে ৭৬টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। ইসলামে নিষিদ্ধ সমকামী প্রেম ও চুম্বনের অপরাধে শরিয়া আইন মেনে তাদের এই শাস্তি দেয়া হয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই দুই সমকামী যুবক একটি পার্কের শৌচাগারে একে অপরকে আলিঙ্গন ও চুম্বন করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ইসলামী শরিয়া আইন অনুযায়ী, তাদের প্রকাশ্যে ৮০ ঘা চাবুক মারার শাস্তি দেয়া হয়।
প্রাদেশিক রাজধানী বান্দা আচেহর একটি পার্কে মঙ্গলবার মোট ১০ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে বেত্রাঘাত করা হয়। সেখানে উপস্থিত থাকা এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছে, দুজনকে আলাদাভাবে বেতের লাঠি দিয়ে বেত্রাঘাত করা হয়।
বান্দা আচেহ শরিয়াহ পুলিশের আইনপ্রয়োগ বিভাগের প্রধান রসলিনা এ. জলিল জানিয়েছেন, গত এপ্রিল মাসে পার্কের একটি জনসাধারণের শৌচাগারে তাদের একসঙ্গে পাওয়া যায়। একই পার্কে তাদের বেত্রাঘাত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সে সময় একজন স্থানীয় ব্যক্তি সন্দেহজনক কিছু দেখে আমাদের খবর দিয়েছিলেন।’
এদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ শাস্তির নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টির আঞ্চলিক গবেষণা পরিচালক মন্টসে ফেরের এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘একটি ন্যায়সংগত ও মানবিক সমাজে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার কোনো স্থান নেই।’
এ ছাড়া একই দিনে তিন নারী ও পাঁচ পুরুষকে বিয়ের বাইরে যৌন সম্পর্ক, বিপরীত লিঙ্গের কারো সঙ্গে নির্জনে থাকা ও অনলাইন জুয়ার দায়ে বেত্রাঘাত করা হয়।
আচেহ প্রদেশে জনসংখ্যার বড় অংশ এখনো এ ধরনের শাস্তিকে সমর্থন করে। এখানে মদপান ও ব্যভিচারের মতো অপরাধের জন্যও এ ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়। ২০০১ সালে দীর্ঘদিনের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমনে জাকার্তা সরকার আচেহকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার পর অঞ্চলটিতে শরিয়াহ আইন চালু হয়।