নিখোঁজের ছয় মাস পর নাটোরে সোশ্যাল ইসলামিক ব্যাংকের নৈশপ্রহরী রুবেল হোসেনের অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গেছে একটি পারিবারিক কবরস্থানের পাশে।
শনিবার (২০ মে) রাতে নাটোর সদর উপজেলার ছাতনি ইউনিয়নের রুয়েরভাগ গ্রামের কবরস্থানের পাশের একটি গর্ত থেকে লাশটি উদ্ধার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
উল্লেখ্য, গত বছর ১১ নভেম্বর রুবেল হোসেন নিখোঁজ হয়েছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত প্রসঙ্গে জেলা ডিবি পুলিশ জানায়,
‘গত বছর ১১ নভেম্বর রুবেল হোসেন নিখোঁজ হন। পরে ৪ ডিসেম্বর তাঁর বাবা রফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে সদর থানায় অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এদিকে, ঢাকার দক্ষিণখান থানার আশকোনার মেডিকেল রোড থেকে আমির হোসেন নামের এক যুবক অপহৃত হন।
তাঁর মোবাইল নম্বর থেকে অপহরণকারীরা তাঁর বোনের কাছে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
এ ঘটনায় তাঁর ভাই বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে অপহরণের মামলা করেন।
ওই মামলায় পুলিশ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া গ্রাম থেকে মুক্তিপণ চক্রের মূল হোতা তারেক আহম্মেদ (৩৫) ও হৃদয় আলীকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।
তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে অপহৃত আমির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁরা নাটোরের রুবেল হোসেনকে সমকামিতার ফাঁদে ফেলে হত্যা করে লাশ পুঁতে রাখার কথা প্রকাশ করেন।
বিষয়টি নাটোরের গোয়েন্দা পুলিশকে জানানো হলে গ্রেপ্তার হওয়া তারেক আহম্মেদ ও হৃদয় আলীকে শনিবার রাতে নাটোরে আনা হয়।
পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে, তারেকের পারিবারিক কবরস্থানের পাশে গর্ত থেকে রুবেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিদর্শক আবদুল মতিন বলেন,
গ্রেপ্তার হওয়া হৃদয় আলীর বাড়ি বাগাতিপাড়ার জামনগর গ্রামে। আর তারেকের বাড়ি নাটোর সদর উপজেলার রুয়েরভাগ গ্রামে।
তাঁরা দুজনই একসময় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
পরে টাকা উপার্জনের কৌশল হিসেবে সমকামিতার ফাঁদ চক্রে জড়িয়ে পড়েন। সেই সূত্র ধরেই তাঁরা রুবেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
গত ১১ নভেম্বর তাঁরা রুবেলকে ঘুমের বড়ি খাইয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে তারেকের বাড়ির পাশে গর্ত করে তাঁকে পুঁতে রাখেন। পরে আত্মগোপনের জন্য তাঁরা তাবলিগ জামায়েতে যান।
তিনি আরও বলেন,
নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে রুবেলের লাশের ময়নাতদন্ত চলছে।
তারেক ও হৃদয় আলীকে নাটোরে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেছেন।
আবেদন মঞ্জুর হলে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড চাওয়া হবে।