মাদারীপুরের বিভিন্ন আড়তে মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেড়েছে। তবে আনারস, তরমুজসহ নানান ফল পাওয়া গেলেও দাম বেড়েছে দেড় থেকে দুইগুণ। ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন আড়তদাররা।
সোমবার (৬ মার্চ) মোস্তফাপুরের ফলের আড়তে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসনের ব্যবসায়ী ও ঝিকরহারিট তৈয়ব আলী মোল্লা কাকাডাকা ভোরে এ আড়তে এসেছেন। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এখান থেকে ফল কিনে স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করছেন তারা। ফল বিক্রির আয় থেকে তাদের সংসার চলে। তাদের মতো প্রতিদিন এই আড়তে শত শত পাইকার ব্যবসায়ীরা ভিড় করেন। এর মধ্যে শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, পিরোজপুর, নড়াইল, শরীয়তপুর, বরিশালসহ দূরদূরন্তের পাইকাররাও রয়েছেন।
তবে হঠাৎ ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা হতবাক। প্রকারভেদে তরমুজ, আনারসসহ অন্যান্য ফলের দাম বেড়েছে দেড় থেকে দুইগুণ। এ আড়তে প্রতি পিস তরমুজ ২০০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, আনারস ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা এবং পেয়ারার কেজি ৪০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা।
ব্যবসায়ী মোশারফ বেপারী বলেন, ‘গত বছর ১০০ তরমুজ ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। এ বছর একই ফলের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। বাড়তি দামে ফল কিনে খুচরা বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় লোকসানও হয়।’
আরেক ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী মোল্লা বলেন, ‘৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি ফলের ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে এবার ফলের দাম দেড় থেকে দুইগুণ বেড়েছে। তাই লোকসানের বোঝা ভারী হচ্ছে। সরকার থেকে তৎপরতা বাড়ালে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
একদিকে ফলন কম হওয়া অন্যদিকে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফলের দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন আড়তদাররা। মায়ের দোয়া ফল ভান্ডারের আড়তদার মোস্তফা দর্জি বলেন, ‘মাঠে ফল কম উৎপাদন হচ্ছে। আর জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে পরিবহন খরচও বেড়েছে। তাই ফলের দাম একটু বাড়তি। তারপরও কৃষকের ন্যায্য দাম পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবকিছু মিলে আড়তদার ও কৃষক কেউই ভালো নেই।’
এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন মাদারীপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন। তিনি জানান, প্রতিদিনই বাজার তদারকি করা হয়। বাড়তি দাম যারা নিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সঙ্গে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অভিযোগ আসলেও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তৎপর রয়েছেন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ৩০ বছরের পুরনো মোস্তফাপুরের অর্ধশত ফলের আড়তে কয়েকশ শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে হওয়ায় দিনে দিনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ফলের আড়ত। এখানে দৈনিক অর্ধকোটি টাকার ফল কেনাবেচা হয়।
2 Replies to “দ্বিগুণ বেড়েছে মৌসুমি ফলের দাম”
Comments are closed.