দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ অনুসন্ধানে বিশেষ টিম গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। চলতি মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের কাছে সম্পদের মালিকদের নামের তালিকা ও তথ্য চাওয়া হবে।
তিনি বলেন, ৪৫৯ জন বাংলাদেশির সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাড়ি ও ব্যবসা রয়েছে। সে বিষয়গুলো দুদক অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছে। তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা দরকার হলে দুবাই কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য- উপাত্ত চাইব। প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাহায্য নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এত বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের জন্য কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দুর্নীতিকে দায়ী করছেন দুদক আইনজীবী।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতিরোধব্যবস্থা খুবই দুর্বল। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হচ্ছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্যাক্স অবজারভেটরি ও দুবাই ভূমি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে এক বছরেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশি তথ্য গোপন করে শত শত কোটি দিয়ে ৯৭২টি স্থায়ী সম্পদের মালিক বনেছেন। পরবর্তী ২ বছরে যার পরিমাণ আরও বেশি।
তথ্য গোপন করে বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুবাইয়ের ৭টি অভিজাত এলাকায় (পাম জুমেরাহ, জুমেরাহ বিচ রেসিডেন্স, দুবাই মেরিনা, জুমেরাহ লেকস টাওয়ার, জুমেরাহ ভিলেজ সার্কেল, ডাউনটাউন দুবাই ও বিজনেস বে) থাকা সম্পদ ও মালিকদের চিহ্নিত করতে চলতি মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের কাছে তথ্য চাইবে দুদকের বিশেষ টিম। আর এ কাজে সাহায্য নেয়া হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলছেন, এত বিপুল পরিমাণ পুঁজি দেশ থেকে চলে যাওয়া দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত।
তিনি বলেন, এভাবে অর্থপাচার দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ ক্ষেত্রে যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে যারা ইতোমধ্যে পাচারের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন, তারা হয়তো অর্থ পাচার করবেন না।
গত ১৫ জানুয়ারি দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির শতকোটি টাকার সম্পদ অনুসন্ধান করতে দুদক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, সিআইডি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সে সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রমের অগ্রগতি জানিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছেন দেশের উচ্চ আদালত।