সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া আইডি খুলে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে সমকামি তরুণদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার একপর্যায়ে আগ্রহী তরুণদের গাজীপুর চৌরাস্তায় ডেকে জিম্মি করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতো।
সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছে এই চক্রের ৫ সদস্য। এরপর একে একে বেরিয়ে আসে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য; উদ্ধার করা হয় অপহৃত এক ব্যক্তির লাশও।
উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ,
‘গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে এই চক্রের ডাকে ঢাকার উত্তরখান এলাকায় আসেন আমির হোসেন (২৫)। পরে চক্রের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপহৃত হন।
এরপর তার পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। সেই টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে চক্রটি।
পরবর্তীতে, দীর্ঘ তদন্ত শেষে বুধবার (১৭) নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ থেকে চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ডিএমপির দক্ষিণখান থানা পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন, চক্রের মূলহোতা মো. তারেক ওরফে তারেক আহাম্মেদ (৩১), মোহাম্মদ
হৃদয় আলী (২৯), আশরফুল ইসলাম (২৩), রাসেল সরদার (২৫) ও তৌহিদুল ইসলাম বাবু (৩০)।
উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম জানান,
‘অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও চতুর। তাদের শনাক্ত করতে বেশ কয়েকবার কৌশল পরিবর্তন করা হয়।
পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্য আশরাফুল ইসলামকে সাভারের জিরাবো এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তার দেওয়া তথ্যে রাসেল সরদার ও তৌহিদুল ইসলাম বাবুকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনজন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে চক্রের মূলহোতা তারেক আহাম্মেদ ও তার সহযোগী মোহাম্মদ হৃদয় আলীর অবস্থানও শনাক্ত করা হয়।
এরপর গতকাল বুধবার (১৭ মে) দক্ষিণখান থানার বিশেষ একটি দল নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।’
তিনি আরও জানান,
‘গ্রেফতার তারেকের দেওয়া তথ্যানুযায়ী গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার একটি বাড়ির
পরিত্যক্ত সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে হাত-পা বাঁধা পলিথিনে মোড়ানো অপহৃত আমিরের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
ডিসি মোর্শেদ আলম জানান,
‘চক্রের মূলহোতা তারেকের একটি ফেইক ফেসবুক প্রোফাইল ছিল।
সেখান থেকে বিভিন্ন সময় ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে সমকামিতার প্রস্তাব দিয়ে অনেককে ম্যাসেজ দেওয়া হতো।
প্রস্তাবে রাজি হওয়াদের গাজীপুরের চৌরাস্তা/শ্রীপুর/মাওনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ডেকে আনত।
এরপর নগদ অর্থ ও মোবাইলসহ দামি জিনিস কেড়ে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দিতে।
নোয়াখালীর আমীরকেও একইভাবে ডেকে আনা হয়। এরপর ১০ লাখ টাকার মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা করে তার লাশ সেফটিক ট্যাংকির ভেতরে ভরে রাখা হয়।’
One Reply to “ভুয়া আইডি খুলে সমকামি তরুণদের অপহরণ করছে এক চক্র!”
Comments are closed.