বাউল গান শুনতে গিয়ে অভির সাথে পরিচয় হয় ৪০ বছর বয়সী নাসরিন আক্তারের। সেখানেই টাকার বিনিময় শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলে রাজী হন ওই নারী।
এরপর অভি ও কমল নামের আরও ১ ব্যক্তি ওই নারীকে নির্জন স্থানে নিয়ে হত্যা করে।
জালকুড়িতে নাসরিন খুনের ঘটনায় কমল ওরফে কুদ্দুসকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার (২২ মে) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার জানান,
অভি ও কমলের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষোভ থেকে ওই নারীকে খুন করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত কমল কুড়িগ্রামের উলিপুরের পূর্ববারা চিলমারীরচর এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে। সে সিদ্ধিরগঞ্জের মুনলাইট গার্মেন্টস এর পাশে বসবাস করতেন।
স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে জালকুড়ির তালতলা শিমা ডাইংয়ের পাশের বালুর মাঠ থেকে
গত ১৯ মে সকালে হাত ও পা বাধা অবস্থায় নাসরিন আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আশরাফ দেওয়ান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং- ৪৪ তাং ১৯/০৫/২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল)
পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান,
তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করে নাসরিন হত্যার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে গত ২১ মে চিলমারীতে অভিযান চালিয়ে কমলকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে কমল জানায়, রংপুরের কাউনিয়ার হয়ভোদখা
গ্রামের চান্দু আকন্দের ছেলে অভির উদ্দিনের সাথে জালকুড়ির পাংখা শাহ মাজারে সাপ্তাহিক ওরশে গান শুনতে গিয়ে পরিচয় হয় নাসরিন আক্তারের।
এক সাথে চা পান করে অভির উদ্দিন নাসরিনকে অর্থের বিনিময়ে একান্ত সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। এতে নাসরিনও সম্মতি জানান।
পরে কমল ও অভির উদ্দিন নাসরিনকে নিয়ে একটি জরাজীর্ণ পরিত্যাক্ত ঘরে প্রবেশ করে।
এ সময় নাসরিনের মোবাইলে একটি ফোন কল আসলে সে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাইরে চলে যায়।
তাৎক্ষনিক ঘরে দুই জন পুরুষ প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে
কমল ও অভির উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ ৯ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে যায়। এতে কমল ও অভির উদ্দিন নাসরিনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পরে।
পরবর্তীতে কমল নাসরিনকে আরো টাকার লোভ দেখিয়ে আরো সময় কাটানোর জন্য বলে।
নাসরিন রাজি হলে তাকে জালকুড়ির তালতলা খালপাড় বালুর মাঠে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে পৌছালে কমলের গলায় থাকা লালসালু কাপড় দিয়ে নাসরিনের হাত বেঁধে এবং
নাসরিনের গায়ের ওড়না দিয়ে দুই পা বেঁধে লালসালু দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরবর্তীতে কমল ও অভির উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সিদ্ধিরগঞ্জের ভাড়া বাসায় এসে উভয়ই গ্রামের বাড়িতে চলে যায়।
পুলিশ সুপার আরও জানান,
আসামী কমলকে গ্রেপ্তারের পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে, ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ঘটনার সময় আসামীর পরিহিত সাদা লুঙ্গি ও গেঞ্জি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়৷