অনেক সমাজে পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব সম্পর্কে এখনও অস্বস্তি রয়ে গেছে। নারীরা বিষয়টি যতটা সম্ভব গোপন রাখেন, পুরুষরাও এড়িয়ে চলেন।
ভারতের জয়পুরের এক সংস্থা মেনস্ট্রুয়াল হাইজিনের বিষয়টি ভিন্ন স্তরে নিয়ে গেছে।
ভারতে স্যানিটারি প্যাড সাধারণত কালো প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে বিক্রি করা হয়৷ কারণ,
পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের বিষয়টিকে ঘিরে সামাজিক অপবাদ কম নয়। তাই স্যানিটারি প্যাড অন্যদের চোখের আড়ালে রাখার চল রয়েছে।
এমনকি জয়পুরের মতো বড় শহরেও অনেকে দোকানে গিয়ে স্যানিটারি প্যাড কিনতে অস্বস্তি বোধ করেন।
জয়পুরের হর্ষিতা আগারওয়াল সেই ট্যাবু ভাঙতে চান। তিনি নিজের স্যানিটারি প্যাড আড়ালে রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন না।
বরং গর্বের সঙ্গে সেটা তুলে ধরেন। নানা রকম ডিজাইনের মধ্যে পছন্দমতো প্যাড বেছে নিতে পেরে হর্ষিতা খুশি হন।
ডিজাইন ও আকর্ষণীয় নকশার কারণে এই প্যাডগুলো বাজারে প্রচলিত স্যানিটারি প্যাডের থেকে আলাদা।
সেগুলো কাপড় দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ এই প্যাড পরিষ্কার করে বারবার ব্যবহার করা যায়।
এই স্যানিটারি প্যাড পুনর্ব্যবহারযোগ্য বলে সেগুলো শুধু অর্থ সাশ্রয় করে না, পরিবেশবান্ধবও বটে।
পরিবেশের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না।
ভারতী সিং চৌহান বলেন, ‘কোনো নারী পাঁচ বছর ধরে ডিসপোজেবল স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করলে তিনি ১৯ দশমিক দুই কিলো বর্জ্য কমাতে পারেন।
প্লাস্টিক, রাসায়নিক ও পারফিউম থাকায় সেই বর্জ্য পচতে ৫০০ থেকে ৮০০ বছর সময় লাগে।
এই প্যাড পাঁচ বছর ধরে বারবার ব্যবহার করা যায়। তারপর সেটি ফেলে দিলে পচনের জন্য তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগবে।’
ভারতে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রায় ৫০ শতাংশ নারী পিরিয়ডের সময় সুরক্ষা হিসেবে এখনও কাপড় ব্যবহার করেন।
কিন্তু অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতির ফলে সংক্রমণের বিশাল ঝুঁকি থেকে যায়।
ভারতী সিং ও তার টিম প্রায়ই গ্রামে গিয়ে নারীদের সঙ্গে ঋতুস্রাব নিয়ে কথা বলেন,
তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন এবং হাতে তৈরি স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের সুবিধা তুলে ধরেন।
ভারতে স্যানিটারি প্যাডের বাজারে বড় কোম্পানিগুলোর আধিপত্য রয়েছে৷ কিন্তু ধীরে হলেও ‘মেরা প্যাড’ নিজস্ব জায়গা করে নিচ্ছে৷
জয়পুরের মেয়েরা সেটি কিনছেন। প্লাস্টিক ব্যাগে না, বরং তারা সেটি প্রকাশ্যে নিয়ে যাচ্ছেন।