আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হারিয়ে দেওয়ার নির্বাচনে বিএনপি আর কখনো যাবে না। সরকারের প্রতারণা ও ছলনায় মানুষ আর ভুল করবে না।
বাংলাদেশ সাধারণ মানুষের দেশ, এই দেশে জজ-ব্যারিস্টার, এমপিদের যে অধিকার একজন সাধারণ মানুষেরও তা-ই। কিন্তু এই সরকার মানুষের সব অধিকার নষ্ট করে দিয়েছে। তাই নিজের কথা, নিজের অধিকারের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে।
গতকাল শনিবার সকালে নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপি আয়োজিত হতদরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, সহসভাপতি আল মামুন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপির অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র হলো চুরি, লুট ও টাকা পাচার করার গণতন্ত্র এবং মানুষকে হত্যা করার গণতন্ত্র।
আওয়ামী লীগ গত ১৪ বছরে নাশকতা ও সন্ত্রাস করে এই দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছে। অথচ বিএনপি মিছিল-মিটিং করতে গেলেই নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিএনপি এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, আর কোনো কথাই শোনা হবে না।’
ফখরুল আরো বলেন, ‘এই সরকার ১৪ বছর ধরে এই দেশ ও মানুষের বুকের ওপর পাথরের মতো বসে আছে। এরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, জনগণের সঙ্গে এই সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
সরকারি দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত, এরা দিনে দিনে ফুলে-ফেঁপে উঠছে। যাদের স্যান্ডেল পরার ক্ষমতা ছিল না তারা এখন গাড়ি চালাচ্ছে, ১০ তলা বাড়ি বানিয়েছে। কেউ গরিব হচ্ছে আর কেউ ফুলে বড়লোক হচ্ছে, যা এখন সারা দেশের চিত্র।
হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আর এদের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা দেওয়া হচ্ছে। কথা বলা, প্রতিবাদ করা, মিছিল করা যাবে না, সভা করা যাবে না।
অথচ স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্য পাকিস্তানিদের হাত থেকে এই দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। কিন্তু সেই গণতন্ত্র এখন নেই। এখন দেশের মালিক ও গণতন্ত্র হলো আওয়ামী লীগ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কৃষক ভাইয়েরা তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। সারের দাম বেশি, তা পাওয়া যায় না। এই সরকার জনগণের ওপর জবরদখল করে আছে। জনগণের মূল্যায়ন তাদের কাছে নেই, কারণ জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত নয়।’
বিএনপি নির্বাচন চায়, তবে তার আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তারা চুরি করবেই। আর এখন ইভিএম বের করেছে, যেখানে জনগণ ভোট দেবে ধানের শীষে আর সেটা হয়ে যাবে নৌকা। এমন ভোট ও জনগণকে নিয়ে মসকরা আর করতে দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপি সাধারণ জনগণ ও সব রাজনৈতিক দল নিয়ে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে, সেই আন্দোলনে জয়লাভ করতে পারলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে, যেখানে সব দলের প্রতিনিধিরা থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির আন্দোলন শান্তিপূর্ণ, বিএনপি কোথাও কোনো অশান্তি করছে না। কিন্তু আঘাত যদি আসে, জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিরোধ করবে।
এখন আওয়ামী লীগ উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তা আর হবে না, মানুষ জেগে উঠেছে, অধিকার আদায়ের মাধ্যমে জনগণ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে। সেই সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান, যাঁদের মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মুক্ত করবে এবং নির্বাচিত করে দেশে ফিরিয়ে আনবে।
2 Replies to “হারিয়ে দেওয়ার নির্বাচনে বিএনপি আর যাবে না : মির্জা ফখরুল”
Comments are closed.